বন্যজন্তুর করিডরে পথবাতি লাগিয়ে বিতর্কে বেসরকারী হোটেল কর্তৃপক্ষ,সরজমিন খতিয়ে দেখতে এলেন বনবিভাগ।

বন্যজন্তুর করিডরে পথবাতি লাগিয়ে বিতর্কে জড়াল বেসরকারী হোটেল কর্তৃপক্ষ। খবর পেয়ে খতিয়ে দেখতে এলেন বনবিভাগ। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের লটিহীড় জঙ্গলের ঘটনা। হোটেল কর্তৃপক্ষের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। খতিয়ে দেখার আশ্বাস বনবিভাগের। কোন অনুমতি না নিয়ে বনবিভাগের জায়গায় কিভাবে এই কাজ করল হোটেল কর্তৃপক্ষ তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বন্যজন্তুর করিডরে পথবাতি লাগানো নিয়েও স্থানীয় গ্রামের মানুষের মধ্যেও জমেছে ক্ষোভ৷ জঙ্গলের রাস্তায় আলো দিলে গ্রামে ঢুকবে বন্যজন্তুরা দাবি এলাকাবাসীর। প্রশ্ন উঠছে কিভাবে কার মদতে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ?

বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত বনবিভাগের বিষ্ণুপুর রেঞ্জের লটিহিড়, লাগারডাঙ্গা, মোলকারী, মুড়াবাড়ি, বাসুদেবপুর সহ একাধিক গ্রামের মানুষের যাতায়াত গভীর জঙ্গলের মাঝ বরাবর মাটির রাস্তা৷ একজঙ্গল থেকে আর এক জঙ্গলে যেতে এই রাস্তা ব্যবহার করে হাতি সহ জঙ্গলের অনান্য বন্যজন্তুরা। সম্প্রতি লটিহীড় গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে মাঝে গড়ে উঠেছে একটি বেসরকারী রিসোর্ট। জঙ্গলের প্রায় ১ কিমি এই রাস্তা বেসরকারী ওই রিসোর্ট যাওয়ার রাস্তা। জঙ্গলের ওই রাস্তায় লাগানো হয়েছে পথবাতি। বনদফতরের রাস্তায় হোটেল কর্তৃপক্ষ এই পথবাতি নিজেদের উদ্যোগে লাগিয়েছেন।

আর তাতেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷ গভীর জঙ্গলের মাঝে হাতি সহ বন্যজন্তুর করিডরে কেন লাগানো হল পথবাতি? কার নির্দেশে কাদের অনুমতি নিয় এই কাজ করেছেন হোটেল কর্তৃপক্ষ তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই খবর পাওয়ার সাথে বিষ্ণুপুর রেঞ্জ অফিসার সহ বনকর্মীরা খতিয়ে দেখতে হাজির হন সেখানে। হোটেল কর্তৃপক্ষের সাথেও কথাও বলেন। বিষ্ণুপুর রেঞ্জ অফিসার জানান, কোন অনুমতি না নিয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ পথবাতি লাগিয়েছেন। ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে লাইট বন্ধ করতে বলা হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় লটিহীড় আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামের মানুষের দাবি, রাস্তায় এই পথবাতি লাগালে জঙ্গলের রাস্তায় বাধা পাবে বন্যজন্তুরা। বাধা পেয়ে গ্রামের দিকে বন্যজন্তুরা ঢুকে পড়বে। ক্ষতি হবে গ্রামের মানুষের। এছাড়াও জঙ্গলের রাস্তায় পথবাতি জ্বললে নিজেদের করিডর হারিয়ে হাতি সহ অনান্য বন্যজন্তুরা ভিন্নপথ বেছে নিলে মানুষের প্রানহানি ও ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি হবে। প্রশ্ন উঠছে বনদফতরের জায়গায় কিভাবে হোটেল কর্তৃপক্ষ বৈদ্যুতিক সংযোগ করে পথবাতি লাগালো।
পথবাতির লাগানো বিদ্যুতের খুটির নিচের জয়েন্ট বক্স গুলিও খোলা অবস্থায় রাখা রয়েছে সেখানেও বন্যজন্তুর ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে বলেও মনে করা হচ্ছে।

বাইট আশীষ ঘোষ ( রেঞ্জার বিষ্ণুপুর)
বাইট বিজয় মূর্মূ ( গ্রামবাসী)
বাইট জগন্নাথ মূর্মূ ( গ্রামবাসী)
Leave a Reply