
গত ১৭ থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত টানা ভারী বর্ষণের ফলে বাঁকুড়া জেলায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে গত ৭২ ঘন্টায় গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে প্রায় ১৯২.৯ মিমি।

১৮ জুন সকালে যেখানে বৃষ্টি ছিল ৪৫.৩ মিমি, ১৯ জুনে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৮.২ মিমি।
এই বৃষ্টির জেরে জেলার ২২টি ব্লকই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ব্লকগুলির মধ্যে রয়েছে – বাঁকুড়া-I ও II, ছাতনা, ওন্দা, কোতুলপুর, জয়পুর, ইন্দাস, তালডাঙরা, সিমলাপাল ও সারেঙ্গা। বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর ও সোনামুখী – এই তিনটি পৌরসভাও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত।

মোট ১০৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ৩৪৯টি গ্রাম বন্যায় আক্রান্ত। পাশাপাশি বাঁকুড়া পৌরসভার ৬টি, বিষ্ণুপুরের ১৯টি এবং সোনামুখীর ৬টি ওয়ার্ড ক্ষতিগ্রস্ত।

জলের অতিরিক্ত চাপ সামলাতে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে আজ ৪৩,৭৫০ কিউসেক জল ছাড়ে ডিভিসি। এছাড়া শিলাবতী ব্যারেজ থেকে ৩৫০০ কিউসেক ও ভৈরব বাঁকি ব্যারেজ থেকে ১৬৯০ কিউসেক জল ছাড়া হয়। তবে মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে এখনো কোনো জল ছাড়া হয়নি।

এপর্যন্ত ৯৯০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে ২০৫টি সম্পূর্ণ ও ৭৮৫টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত। প্রশাসনের তরফে ১০টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে, যার মধ্যে বর্তমানে ৭টি চালু রয়েছে এবং সেখানে ৫৩০ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। বিতরণ করা হয়েছে ২৩,২৮২টি ত্রিপল, ১৩ মেট্রিক টন চাল ও ২০০০টি পোশাক।

জেলায় ১২টি কজওয়ে প্লাবিত হওয়ায় যান চলাচল ও সাধারণ মানুষের যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পুলিশ ও সিভিল ডিফেন্স মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। জেলার প্রতিটি ব্লক, মহকুমা ও সদর দপ্তরে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম চালু রয়েছে।

বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের তরফে জনগণকে সতর্ক থাকতে এবং প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলার অনুরোধ করা হয়েছে।
Leave a Reply