“রহস্যময় হাকন্দ মন্দির”সেই মন্দিরকে নিয়ে প্রতিবছরের শুরু হয় হাকন্দ মেলা। এই মেলা চলে তিন দিন, চলে ঠাকুরের নাম সংকীর্তন

Bangla circle news

“রহস্যময় হাকন্দ মন্দির”সেই মন্দিরকে নিয়ে প্রতিবছরের শুরু হয় হাকন্দ মেলা। এই মেলা চলে তিন দিন, চলে ঠাকুরের নাম সংকীর্তন
“””””””””””””””””””””””””””””””””””
রাজ রাজার আমলেপাল ও সেন যুগের রহস্যময় আকন্দ মন্দিরকে নিয়ে লুকিয়ে আছে নানান রহস্য।
ধর্ম পূজার আদি গ্রন্থ “শূণ্যপুরাণ” এর রচয়িতা ‘রামাই পণ্ডিত’ , “শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পুঁথি” প্রণেতা ‘অক্ষয় কুমার সেনের’ জন্মভিটা ও ধর্ম ঠাকুর স্মৃতি বিজড়িত ” হাকন্দ মন্দির” টি রাঢ় বঙ্গের বাঁকুড়া জেলার জয়পুর থানার দক্ষিণ পূর্বে “ময়নাপুর” গ্রামে অবস্থিত। কথিত আছে “মঙ্গল” কাব্যাখ্যাত ‘লাউ সেনের’ কন্যা ‘ময়নাবতী’ র নামে গ্রামের নাম হয় “ময়নাপুর”।
গ্রামের মধ্যস্থলে অবস্হিত “ধর্ম মঙ্গল” কাব্যে উল্লেখিত “হাকন্দ পুষ্করিনী”। হাকন্দ শব্দের অর্থ হলো গোলাকৃতি কুণ্ড। ময়নাপুর বাজারে এই প্রাচীন পুষ্করিনী র সামনে অবস্থিত এই প্রাচীন হাকন্দ মন্দির। পশ্চিমমুখী পাথরের তৈরী সপ্তরথ নকশায় নির্মিত পীড়া দেউলটি বাঁকুড়া জেলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ পুরাকীর্তি।
“নন্দবংশ” গ্রন্থের রচয়িতা চন্দ্রশেখর মুখোপাধ্যায়ের তৃতীয় পুত্র দ্যোতিনী প্রসাদ মুখোপাধ্যায় নিজ উদ্যোগে ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে পুষ্করিনী টির সংস্কার করান। পুষ্করিনী সংস্কারের‌ সময়ে এর মধ্যস্থলে একটি পাথরের মন্দিরের চূড়া দেখতে পাওয়া যায়। একটি বাঁশের বাতা গভীরে চালনা করা হলে তা প্রায় ২৪ ফুট নীচে পাথরের বেদি তে গিয়ে বাধা প্রাপ্ত হয়। পর্যাপ্ত অর্থ না থাকার কারণে আর খনন কার্য্য চালিয়ে মন্দিরটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পরে তিনি কেন্দ্রীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের নিকট আবেদন করেছিলেন এই রহস্যময় মন্দির উদ্ধারের । খনন কার্য্য চলা কালীন অনেক প্রাচীন মূর্তি এবং নানা অলঙ্কার উদ্ধার হয়, যেগুলি বর্তমানে বিষ্ণুপুর যোগেশচন্দ্র পুরাকৃতি ভবনে সংরক্ষিত আছে।
অনেকে মনে করেন অনাবিষ্কৃত ওই মন্দির টি ধর্ম ঠাকুরের পূজারী রামাই পণ্ডিতের আসন কক্ষ ছিলো কেউ আবার মনে করেন এটি মাল্লারাজাদের কোনো গোপন কক্ষ ছিলো। এই হাকন্দ পুস্করিনী র জলকে গঙ্গা জলের ন্যায় পবিত্র মনে করেন এখানের অধিবাসীরা। কথিত আছে চৈত্র মাসে মধুকৃষ্ণ দ্বাদশী হতে চতুর্দশী তিথী পর্যন্ত অন্তঃসলিলা ভগবতী গঙ্গা এই পুষ্করীনিতে অবস্থান করে।
বর্তমানে মন্দিরটি তে শিবলিঙ্গ থাকলেও এটি অতীতে ধর্ম ঠাকুরের মন্দির ছিলো বলে মনে করেন অনেকে।
Archaeological Survey of India কাছে গ্রামবাসীদের একান্ত অনুরোধ বর্তমানে এই হাকন্দ মন্দিরটি অবহেলিত প্রায় ভগ্নাবশেষ অবস্থায় রয়েছে মন্দিরটি সংস্কারের প্রয়োজন তা না হলে অচিরে হারিয়ে যাবে এই স্থাপত্য।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *