মরেও শান্তি নেই!শেষ যাত্রা তেও নিরাপদ নয় গ্রামবাসীরা। কেন এ কথা বলা হচ্ছে বিস্তারিত দেখন, হাঁটু কাদায় কাঁধে করে নিয়ে যাওয়া হল মৃতদেহ

Bangla circle news

শেষ যাত্রাও নিরাপদ নয়।

সংবাদদাতা কাজী আমিরুল ইসলাম বীরভূম।

গত ৫০ বছর ধ’রে এই অবস্থা। এমনই রাস্তার বেহাল চিত্র ধরা পড়ল বীরভূম জেলার খয়রাশোল ব্লকের কেন্দ্রগড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে মাটিয়ালা গ্রামে। বৃষ্টি হ’লে তো দুর্ভোগ আরও বেশি। পাকা রাস্তার অভাবে মৃতকে সমাধিস্থ করতে গেলেও জলেকাদায় প্রায় ডুবে যেতে হয় শববাহকদের। তবু হুঁশ নেই প্রশাসনের। জলযন্ত্রণার মধ্যেই এক করুণ ছবি দেখা গেল মাটিয়ালা গ্রামে। এই গ্রামের মানুষজনের মরেও যেন শান্তি নেই। কথায় আছে মারা গেলে শান্তি পায় মানুষ কিন্তু এই গ্রামে ঠিক তার উল্টো চিত্র দেখা গেল।

মাটিয়ালা গ্রামে কেউ মারা গেলে মাটি দেওয়ার জন্য নিয়ে যেতে হয় প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে কবরস্থানে। আর এই রাস্তা যেতেই নাজেহাল হতে হয় গ্রামবাসীদের। আড়াই কিলোমিটার রাস্তায় কোন মৃতদেহ নিয়ে যেতে গেলে দুর্বিসহ অবস্থা হয় গ্রামবাসীদের। দীর্ঘদিনের তাদের দাবি এই কবরস্থান যাওয়ার রাস্তা যেন ভালো করে দেওয়া হয়। গ্রামবাসীদের আক্ষেপ যেন মরেও শান্তি নেই আমাদের। শুধুমাত্র প্রতিশ্রুতি যেন সার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তাছাড়াও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন জায়গায় গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষের জন্য পথশ্রী প্রকল্পের আওতায় রাস্তা তৈরি করে দিয়েছেন। কিন্তু এই গ্রামের কাদায় ভর্তি রাস্তাটা আজ পর্যন্ত তৈরি হইনি বলে অভিযোগ করেন গ্রামবাসীরা। জসিম খান বলে এক গ্রামবাসী জানান, আমার বয়স হচ্ছে ৩৬ বছর। তখন থেকেই দেখছি এরকমই আছে রাস্তাটা। বৃষ্টির কারণে রাস্তা কাদায় ভরে যাওয়ায় মৃতদেহ নিয়ে কবরস্থানে যাওয়া একটি কষ্টসাধ্য ব্যাপার। গ্রামের মানুষজন মিলে কোনোমতে মৃতদেহ নিয়ে কবরস্থানে এলাম। জল-কাদার মধ্যে দিয়ে হেঁটে যেতে হয়, যা খুবই কষ্টকর ছিল।

অনেক কষ্টে আমরা কবরস্থানে পৌঁছালাম। পাশাপাশি স্থানীয় মসজিদের ইমাম নিজামুদ্দিন রিজভী জানান, রাস্তাটা এত খারাপ যে, যারা এই রাস্তা দিয়ে এসেছে একমাত্র তারাই জানে। তাছাড়াও গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও কোন সুরাহা হয়নি।

গ্রামে কারোর মৃত্যু হলে এই জায়গায় প্রত্যেককে আসতে হবে। তবে বেহাল রাস্তার জন্য সকলে আসতে পারেন না। তাই আমি রাজ্য সরকারকে আবেদন করব এই রাস্তাটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঠিক হয়।

কাজী আমীরুল ইসলামের রিপোর্ট।।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *